
ইতালিতে দিন দিন বাড়ছে বিদেশি নাগরিকদের সংখ্যা। সর্বশেষ কারিতাস-মিগ্রান্তেস ফাউন্ডেশনের ৩৪তম অভিবাসন প্রতিবেদনে উঠে এসেছে চমকপ্রদ সব তথ্য। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইতালির মোট জনসংখ্যার ৯ দশমিক ২ শতাংশই বিদেশি—সংখ্যায় প্রায় ৫৪ লাখ মানুষ।
দেশটির কর্মশক্তির ১০ দশমিক ৫ শতাংশ এখন বিদেশিদের হাতে। শিক্ষাক্ষেত্রেও একই চিত্র—মোট শিক্ষার্থীর ১১ দশমিক ৫ শতাংশই বিদেশি। অর্থাৎ, ইতালির অর্থনীতি ও সমাজের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠছেন অভিবাসীরা।
বিদেশিদের প্রধান উৎস দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে রোমানিয়া, মরক্কো, আলবেনিয়া, ইউক্রেন ও চীন। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশি ও পেরুভিয়ান নাগরিকদের সংখ্যা দ্রুত বেড়েছে। মাত্র দুই বছরে ইতালিতে বাংলাদেশিদের উপস্থিতি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এমনকি নতুন ইস্যু হওয়া রেসিডেন্স পারমিটের তালিকায় বাংলাদেশ এখন শীর্ষ তিন দেশের একটি।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বিদেশিরা মূলত ইতালির মধ্য ও উত্তরাঞ্চলে বাস করেন। তবে অনিয়মিত অভিবাসীদের দেখা মেলে দেশের প্রায় সব অঞ্চলে। তাদের আবাসন পরিস্থিতি অনিশ্চিত—অনেকেরই জীবন চলছে নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যে।
একইসঙ্গে, দেশটিতে দেখা দিয়েছে তীব্র আবাসন সংকট। এতে বৈষম্য ও সামাজিক দুরবস্থা আরও বেড়েছে। তবুও ইতালির নিম্ন জন্মহার ঠেকাতে বিদেশিদের অবদান গুরুত্বপূর্ণ। ২০২৪ সালে জন্ম নেওয়া শিশুদের মধ্যে ২১ শতাংশ নবজাতকের অন্তত একজন অভিভাবক বিদেশি নাগরিক।
এ বছরই রেকর্ড দুই লাখ ১৭ হাজারের বেশি মানুষ ইতালির নাগরিকত্ব পেয়েছেন। ফলে ইতালির জনসংখ্যাগত পরিবর্তনে অভিবাসীরা বড় ভূমিকা রাখছেন।
বর্তমানে ইতালিতে কর্মরত আছেন দুই কোটি ৪০ লাখ মানুষ, এর মধ্যে বিদেশি কর্মী প্রায় ২৫ লাখ। গত বছর বিদেশিদের জন্য নতুন চাকরির চুক্তি বেড়েছে ৫ দশমিক ৮ শতাংশ। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলে বিদেশিদের অংশগ্রহণ সবচেয়ে বেশি—২১ শতাংশেরও বেশি।
