
নতুন জীবনের আশায়, পরিবার ও প্রিয়জনদের ছেড়ে হাজারো মানুষ প্রতিনিয়ত বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন। কেউ চান উন্নত জীবনের সুযোগ, কেউ বা পরিবারের ভবিষ্যৎ গড়ার স্বপ্নে দেশের মাটির গন্ধ ছেড়ে যাচ্ছেন দূর দেশে। তবে প্রবাস জীবনের বাস্তবতা অনেক সময়ই কঠিন ও জটিল হয়ে ওঠে। এর কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে একটি ছোট কাগজ—ভিসা। কিন্তু এই কাগজটাই প্রবাসীদের জীবনে নিরাপত্তা, বৈধতা ও টিকে থাকার প্রধান ভরসা।
ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া, সময়মতো নবায়ন না করা, বা স্পনসর পরিবর্তনের অনুমতি না পাওয়া—এসব কারণে বহু প্রবাসী বিপাকে পড়েন। কেউ কাজ হারান, কেউ কারাগারে যান, আবার অনেককে শূন্য হাতে দেশে ফিরে আসতে হয়। দালালের প্রলোভনে পড়ে কেউ কেউ অজান্তেই অবৈধ অবস্থায় থেকে যান, যার পরিণতি হয় ভয়াবহ। অচেনা দেশ, অপরিচিত ভাষা ও কঠোর আইন মানার জটিলতায় তখন তাদের জীবন হয়ে ওঠে এক অন্তহীন সংগ্রাম।
তবে সামান্য সতর্কতা ও নিয়ম মেনে চললেই এই ঝুঁকি অনেকটাই কমানো সম্ভব। বিদেশে যাওয়ার আগে ভিসার মেয়াদ ও শর্ত ভালোভাবে বুঝে নেওয়া জরুরি। সবসময় নিজের কাছে বৈধ চুক্তিপত্র ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র রাখা উচিত। ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে নবায়নের আবেদন করা, এবং যেকোনো জটিল পরিস্থিতিতে সরাসরি দূতাবাস বা কনস্যুলেটের সঙ্গে যোগাযোগ করাই সবচেয়ে নিরাপদ পদক্ষেপ। কোনো অবস্থাতেই দালাল বা অননুমোদিত ব্যক্তির ওপর নির্ভর করা উচিত নয়।
এছাড়া বিদেশ যাওয়ার আগে নিজের দক্ষতা ও যোগ্যতা বাড়ানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দক্ষ কর্মী হিসেবে আপনি যত বেশি যোগ্য, প্রবাস জীবনের চ্যালেঞ্জ তত সহজে মোকাবিলা করা সম্ভব হয়।
সবশেষে বলা যায়, প্রবাস জীবন কখনো সহজ নয়। কিন্তু সচেতনতা, নিয়ম মেনে চলা ও দায়িত্বশীল আচরণের মধ্য দিয়েই বিদেশের মাটিতে গড়ে তোলা যায় নিরাপদ, স্থিতিশীল ও সফল এক জীবন। সতর্ক পদক্ষেপই হতে পারে প্রবাস জীবনের সাফল্যের প্রথম ধাপ।
