
রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট—র্যাপিডের সর্বশেষ অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, গত এক দশকে বাংলাদেশ শক্তিশালী উৎপাদন সম্প্রসারণের অভিজ্ঞতা অর্জন করলেও একই সময়ে উৎপাদন খাতে কর্মসংস্থান কমেছে প্রায় ১৪ লাখ। আজ ঢাকায় আয়োজিত এক সেমিনারে র্যাপিডের চেয়ারম্যান এম এ রাজ্জাক এই গবেষণা উপস্থাপন করে জানান, নীতিগত ভারসাম্যহীনতা এবং শ্রমবাজারের চাহিদার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ শিক্ষা ব্যবস্থা কর্মসংস্থান তৈরির প্রধান বাধা হিসেবে কাজ করছে। তাঁর মতে, আগামী দশকে কর্মসংস্থান-কেন্দ্রিক নীতি প্রণয়ন না হলে উন্নয়নের পথ থমকে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
গবেষণায় বলা হয়, তৈরি পোশাক শিল্পে অটোমেশন ও প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে শ্রমের চাহিদা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। ২০১৩ সালে ১ মিলিয়ন ডলারের পোশাক উৎপাদনে প্রয়োজন হতো ২২০ জন কর্মী, যেখানে ২০২৪ সালে একই উৎপাদনে প্রয়োজন হয়েছে মাত্র ৯৪ জন। ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে তৈরি পোশাক রপ্তানি ১২ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে ৪০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হলেও প্রায় ৪ মিলিয়ন কর্মীর কর্মসংস্থান স্থবির থেকেছে।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, উৎপাদন খাতে নারীর কর্মসংস্থান ২০১৩ সালের ৩ দশমিক ৭৮ মিলিয়ন থেকে কমে ২০২৪ সালে দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ৯৫ মিলিয়নে; যা খাতটিতে নারীর অংশগ্রহণকে ৪০ শতাংশ থেকে নামিয়ে এনেছে ২৪ শতাংশে।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, দেশে বার্ষিক স্নাতকের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়লেও পাঠ্যক্রমের একটি বড় অংশ শিল্পের চাহিদার সঙ্গে অপ্রাসঙ্গিক। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে “বেকার স্নাতক তৈরির কারখানা” হিসেবেও আখ্যা দেওয়া হয়। শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সারওয়ার জাহান ভূঁইয়া বলেন, দক্ষতার ঘাটতির কারণে বিদেশে অদক্ষ অভিবাসন বাড়ছে, যা রেমিট্যান্স আয়ের সম্ভাবনাকে সীমিত করছে।
র্যাপিড জানায়, বছরে প্রয়োজন ২২ লাখ নতুন কর্মসংস্থান, কিন্তু তৈরি হচ্ছে অর্ধেকেরও কম। বক্তারা নবম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় কর্মসংস্থানকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়ার আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে আইএলও, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন শিল্পখাতের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
