ইতালিতে ৫ লাখ কর্মী নিয়োগ, বাংলাদেশিদের অগ্রাধিকার

ইউরোপের শ্রমবাজারে বাংলাদেশিদের জন্য খুলে গেছে বড় সুযোগ। শ্রমিক সংকটে থাকা ইতালি ঘোষণা করেছে নতুন এক দীর্ঘমেয়াদি নিয়োগ পরিকল্পনা। ২০২৬ থেকে ২০২৮—এই তিন বছরে দেশটি কমপক্ষে ৫ লাখ বিদেশি কর্মী নেবে, যার মধ্যে বাংলাদেশিরাও থাকছেন অগ্রাধিকার তালিকায়। ইতালির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আনসা এবং অভিবাসনবিষয়ক প্ল্যাটফর্ম ইনফোমাইগ্রেন্টস জানায়, পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে পাস হওয়া ১৪৬ নম্বর ‘সারকাতি চলতিরি ডিক্রি’র মাধ্যমেই এই নিয়োগ কার্যক্রম শুরু হবে।

ডিক্রি অনুযায়ী, ২০২৬ সালেই নিয়োগ দেওয়া হবে ১ লাখ ৬৪ হাজার ৮৫০ জন কর্মী। ধাপে ধাপে তিন বছরের শেষে মোট সংখ্যা দাঁড়াবে প্রায় ৫ লাখে। এর আগেও ২০২৩ থেকে ২০২৫ সময়ে ইতালির মেলোনি সরকার ৪ লাখ ৫০ হাজারের বেশি বিদেশি শ্রমিককে ওয়ার্ক পারমিট প্রদান করেছে।

নতুন ডিক্রিতে যুক্ত হয়েছে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য সুবিধা। আবেদন জমা দেওয়ার মাত্র ৩০ দিনের মধ্যেই ইস্যু হবে ওয়ার্ক পারমিট, যা আগে মাসের পর মাস লাগত। উৎস দেশে দক্ষতা প্রশিক্ষণ নেওয়া কর্মীদের ভিসা আবেদন সময় বাড়ানো হয়েছে ২০২৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। কেয়ারগিভার খাতে নেওয়া হবে অন্তত ১০ হাজার বিদেশি কর্মী। মানবপাচার বা শ্রমশোষণের শিকার অভিবাসীদের আবাসিক অনুমতি ৬ মাস থেকে বাড়িয়ে ১ বছর করা হয়েছে, এবং কৃষি খাতে শোষণ প্রতিরোধে কঠোর আইন যুক্ত হয়েছে। পরিবারসহ বিদেশি কর্মী আনার আবেদন সময় ৯০ দিন থেকে বাড়িয়ে ১৫০ দিন করা হয়েছে।

নতুন ডিক্রিতে যেসব খাতে বেশি নিয়োগ হবে—কৃষি, নির্মাণ, হোটেল ও রেস্টুরেন্ট, লজিস্টিকস, কারখানা, পরিচ্ছন্নতা, গৃহস্থালি সহায়তা এবং কেয়ারগিভার—এসব খাতে ইতোমধ্যেই বাংলাদেশিদের শক্ত অবস্থান রয়েছে। দীর্ঘদিনের সুনামের কারণে নিয়োগদাতারাও বাংলাদেশিদের প্রতি বাড়তি আস্থা দেখাচ্ছেন।

ইতালি বর্তমানে ভয়াবহ জনসংখ্যা সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে—জন্মহার কমছে, প্রবীণ জনসংখ্যা বাড়ছে, কর্মক্ষম তরুণের ঘাটতি তৈরি হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনীতি টিকিয়ে রাখতে বিদেশি শ্রমিকই হয়ে উঠছে মূল ভরসা। আর সেই কারণেই বাংলাদেশিদের জন্য তৈরি হয়েছে নতুন সম্ভাবনার বৃহৎ দুয়ার।

0
Show Comments (0) Hide Comments (0)
Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Recent Posts: